অন্যান্য টপিকনবীদের জীবনী

উহুদের যুদ্ধ পর্ব -২

কুরাইশ সেনাবাহিনীর যুদ্ধের সাজ সরঞ্জাম এবং কামান

বছর পূর্ণ হতে না হতেই কুরাইশের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে গেল। তিন হাজার সৈন্যের এক বাহিনীর সঙ্গে ১৫ জন মহিলা গেল। কুরাইশ নেতৃবর্গের ধারণায় মেয়েদেরকে সঙ্গে রাখলে তাদের মান-সম্ভ্রম রক্ষাহেতু বেশী করে বীরত্ব প্রকাশ করার ও ‘আমরণ লড়ে যাওয়ার প্রেরণা লাভ করা যাবে।

সওয়ারীর জন্য তাদের সঙ্গে ছিল তিন হাজার উট এবং যুদ্ধের জন্য ছিল দু’শটি ঘোড়া।[1] ঘোড়াগুলোকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখার জন্য ওগুলোর পিঠে আরোহণ করা হয়নি। প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে সাত’শটি ছিল লৌহবর্ম। পুরো বাহিনীর জন্য আবূ সুফইয়ানকে সেনাপতি নির্বাচন করা হয় এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদকে ঘোড়সওয়ারী বাহিনীর সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়, আর ইকরামা ইবনু আবূ জাহলকে তার সহকারী বানানো হয়। প্রথা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পতাকা বনু আবিদ্দার গোত্রের হস্তে সমর্পণ করা হয়।

মক্কা বাহিনীর যুদ্ধ যাত্রা

এরূপ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের পর মক্কাবাহিনী এমন অবস্থায় মদীনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করল যে, মুসলিমগণের বিরুদ্ধে ক্রোধ, প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ গ্রহণের উত্তেজনা তাদের অন্তরে অগ্নিশিখার ন্যায় প্রজ্জ্বলিত ছিল, যা অচিরেই এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ইঙ্গিত বহন করছিল।

মদীনায় সংবাদ

আব্বাস (রাঃ) কুরাইশের এ উদ্যোগ আয়োজন ও যুদ্ধ প্রস্তুতি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং এতে তিনি অত্যন্ত বিচলিত বোধ করছিলেন। সুতরাং তিনি এর বিস্তারিত সংবাদ সম্বলিত একখানা পত্রসহ জনৈক বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে মদীনায় প্রেরণ করেন। আব্বাস (রাঃ)-এর দূত অত্যন্ত দ্রুতগতিতে মদীনার পথে এগিয়ে চললেন। মক্কা হতে মদীনা পর্যন্ত প্রায় পাঁচশ কিলোমিটার পথ মাত্র তিন দিনে অতিক্রম করে তিনি ঐ পত্রখানা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর হাতে অর্পণ করেন। ঐ সময় তিনি মসজিদে কুবাতে অবস্থান করছিলেন।

উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) পত্রখানা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-কে পাঠ করে শুনালেন। তিনি এগুলোর গোপনীয়তা রক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন এবং খুব দ্রুত গতিতে মদীনায় আগমন করে আনসার ও মুহাজিরদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সলা-পরমার্শ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button