উহুদের যুদ্ধ পার্ট ১৩
পত্নীর বক্ষ ছেড়ে তরবারীর ধারের উপর
এদিকে আর এক দৃশ্য চোখে পড়ে। উপর্যুক্ত আত্মত্যাগীদের মধ্যে আর একজন হচ্ছেন হানযালাতুল গাসীল (রাঃ), যিনি এক অদ্ভূত মাহাত্ম্য নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিন ঐ আবূ আমির রাহিবের পুত্র, যে পরবর্তী কালে ফাসিক নামে প্রসিদ্ধ হয় এবং যার বর্ণনা ইতোপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে। হানযালা (রাঃ) নব বিবাহিত ছিলেন। যখন যুদ্ধে গমনের জন্য ঘোষণা দেয়া হয় তখন তিনি নববধূকে আলিঙ্গন করছিলেন। যুদ্ধের ঘোষণা শোনা মাত্রই তিনি নববধূর বক্ষ ছেড়ে দিয়ে জিহাদের জন্যে বেরিয়ে পড়েন। যখন উহুদ প্রান্তরে ভীষণ যুদ্ধ চলছে তখন তিনি মুশরিকদের সারিগুলো ভেদ করে তাদের সেনাপতি আবূ সুফইয়ান পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন এবং তাকে প্রায় ধরাশায়ী করতেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু মহান আল্লাহ তাঁর ভাগ্যেই শাহাদত লিখে রেখেছিলেন। তাই যেমনই তিনি আবূ সুফইয়ানকে লক্ষ্য করে তরবারী উঁচু করে ধরেছেন, তেমনই শাদ্দাদ ইবনু আউস তাঁকে দেখে ফেলে এবং তৎক্ষণাৎ তাঁকে আক্রমণ করে। ফলে তিনি নিজেই শহীদ হয়ে গেলেন।
তীরন্দাযদের কার্যকলাপ
জাবালে রুমতের উপর যে তীরন্দাযদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মোতায়েন করেছিলেন তাঁরাও যুদ্ধের গতি মুসলিমগণের অনুকূলে আনবার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মক্কার ঘোড়সওয়াররা খালিদ ইবনু ওয়ালীদের নেতৃত্বে এবং আবূ আমির ফাসিকের সহায়তায় মুসলিম সৈনিকদের বাম বাহু ভেঙ্গে দেয়ার জন্যে তিন বার ভীষণ আক্রমণ চালায়। কিন্তু মুসলিম তীরন্দাযগণ তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে তাদেরকে এমনভাবে ঘায়েল করে দেন যে তাদের তিনটি আক্রমণই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।