অন্যান্য টপিকনবীদের জীবনী

উহুদের যুদ্ধ পার্ট ১৭

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আশে পাশে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম

মুসলিম সেনাবাহিনী যখন ভীড়ের মধ্যে এসে মুশরিকদের সারিগুলোর দু’টি সারির মাঝে পড়ে যান এবং তাঁদেরকে প্রচন্ডভাবে আক্রমণ করা হয়, ঠিক সেই সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর আশে পাশেও রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চলতে থাকে। এ কথা আগেই বলা হয়েছে যে, মুশরিকরা মুসলিমগণকে যখন ঘিরে ফেলতে শুরু করে তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট মাত্র নয় জন সাহাবী ছিলেন এবং যখন মুসলিমগণকে ‏‏ ‘আমার দিকে এসো, আমি আল্লাহর রাসূল’ এ কথা বলে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ডাক দেন তখন তাঁর ডাক মুশরিকরা শুনে ফেলে এবং তাঁকে চিনে নেয় (কেননা, ঐ সময় তারা মুসলিমগণের চেয়ে বেশী তাঁর নিকটবর্তী ছিল) সুতরাং তাঁরা দ্রুত বেগে ধাবিত হয়ে তাঁকে আক্রমণ করে বসে এবং কোন মুসলমানের আগমনের পূর্বেই নিজেদের সম্পূর্ণ বোঝা নিক্ষেপ করে। এ আকস্মিক আক্রমণের ফলে ঐ মুশরিকদের ও সেখানে উপস্থিত নয় জন সাহাবীর মধ্যে ভীষণ লড়াই শুরু হয়ে যায়। এতে নাবীপ্রেম, বীরত্বপনা এবং প্রাণ ত্যাগের অসাধারণ ঘটনাবলী সংঘটিত হয়।

সহীহুল মুসলিমে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাত জন আনসার ও দুই জন কুরাইশী সাহাবীসহ পৃথক রয়ে গিয়েছিলেন। যখন আক্রমণকারীরা তাঁর একেবারে নিকটে পৌঁছে যায় তখন তিনি বলে ন, এমন কেউ আছে কি, যে এদেরকে আমার নিকট হতে দূর করে দিতে পারে? তাঁর জন্যে জান্নাত রয়েছে। অথবা বলেন, ‘সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে।’

তাঁর এ কথা শুনে একজন আনসারী সাহাবী অগ্রসর হন এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে যান। এরপর পুনরায় মুশরিকরা তাঁর একেবারে নিকটে এসে পড়ে এবং এবারও তিনি আগের মতোই কথা বলেন। এভাবে পালাক্রমে সাত জন আনসারী সাহাবী শহীদ হয়ে যান। এ দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বীয় অবশিষ্ট দু’জন সাহাবীকে বলেন, ‘আমরা আমাদের সঙ্গীদের সাথে ন্যায় বিচার করলাম না।’[1]

এ সাতজনের মধ্যে শেষের জন ছিলেন উমারাহ ইবনু ইয়াযীদ ইবনু সাকান (রাঃ)। তিনি লড়তেই থাকেন, শেষ পর্যন্ত অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে মাটিতে পড়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker