উহুদের যুদ্ধ পার্ট ২২
উবাই ইবনু খালফের হত্যা
ইবনু ইসহাক্ব বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন ঘাঁটিতে পৌঁছে যান তখন উবাই ইবনু খালফ এগিয়ে গিয়ে বলে, ‘মুহাম্মাদ (সাঃ) কোথায়? হয় আমি থাকব, না হয় সে থাকবে।’ তার এ কথা শুনে সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমাদের মধ্য হতে কেউ তাঁর উপর আক্রমণ করব কি?’ উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, ‘তাকে আসতে দাও।’ সে নিকটবর্তী হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হারিস ইবনু সম্মাহ (রাঃ)-এর নিকট হতে একটি ক্ষুদ্র বর্শা চেয়ে নিয়ে নাড়া দেন। তিনি ওটা নাড়া দেয়া মাত্রই জনগণ এমনভাবে এদিকে ওদিক সরে পড়ে যেমনভাবে উট তার শরীর নাড়া দিলে মাছিগুলো উড়ে যায়। এরপর তিনি তাঁর মুখোমুখী হন এবং শিরস্ত্রাণ ও বর্মের মধ্যস্থলে গলার পার্শ্বে সামান্য জায়গা খোলা দেখে ওটাকেই লক্ষ্য করে এমনভাবে বর্শার আঘাত করেন যে, সে ঘোড়া হতে গড়িয়ে পড়ে যায়। তার ঘাড়ে খুব বড় একটা অাঁচড় ছিল না, রক্ত বন্ধ ছিল, এমতাবস্থায় সে কুরাইশদের নিকট পৌঁছে বলে, ‘মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাকে হত্যা করে ফেলেছে।’ জনগণ তাকে বলে, ‘আল্লাহর কসম! তোমার মন দমে গেছে, নচেৎ তোমাকে আঘাত তো তেমন লাগে নি, তথাপি তুমি এত ছটফট করছো কেন?’ উত্তরে সে বলে, ‘সে মক্কায় আমাকে বলেছিল, আমি তোমাকে হত্যা করব।এ জন্য, আল্লাহর কসম! যদি সে আমাকে থুথু দিত তা হলেও আমার জীবন শেষ হয়ে যেত।’ অবশেষে এ শত্রু মক্কা ফিরবার পথে ‘সারফ’ নামক স্থানে পৌঁছে মৃত্যু বরণ করে।[2] আবুল আসওয়াদ (রাঃ) উরওয়া (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, সে বলদের মতো আওয়ায বের করত এবং বলত, ‘যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! যে কষ্ট আমি পাচ্ছি, যদি যিল মাজাযের সমস্ত অধিবাসী ঐ কষ্ট পেত তবে তারা সবাই মরে যেত।’
ত্বালহাহ (রাঃ) নাবী (সাঃ)-কে উঠিয়ে নেন
পাহাড়ের দিকে নাবী (সাঃ)-এর প্রত্যাবর্তনের পথে একটি টিলা পড়ে যায়। তিনি ওর উপর আরোহণের চেষ্টা করলেন বটে, কিন্তু সক্ষম হলেন না। কেননা, একে তো তাঁর দেহ ভারী হয়েছিল, দ্বিতীয়ত, তিনি দুটি বর্ম পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। তাছাড়া, তিনি কঠিনভাবে আঘাত প্রাপ্তও হয়েছিলেন। সুতরাং ত্বালহাহ ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ) নীচে বসে পড়েন এবং তাঁকে সওয়ার করিয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান। এভাবে তিনি টিলার উপর পৌঁছে বলেন, ‘ত্বালহাহ (জান্নাত) ওয়াজিব করে নিয়েছে।’