বদরের যুদ্ধ পার্ট ৩
মক্কা সেনাবাহিনীর সংখ্যা
প্রথমাবস্থায় মক্কা বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল তের শত। তাদের কাছে ছিল একশ ঘোড়া এবং ছয়শ লৌহবর্ম। উটের সংখ্য এত বেশী ছিল যে, তার কোন হিসাব কিতাবই ছিল না। সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিল আবূ জাহল ইবনু হিশাম। এ বাহিনীর রসদ পত্রের দায়িত্বে ছিল নয় জন সম্ভ্রান্ত কুরাইশ। কোন দিন নয়টি এবং কোন দিন দশটি এভাবে প্রতিদিন উট জবেহ করা হতো।
বনু বাকর গোত্রের সমস্যা
সর্বাত্মক প্রস্তুতি সহকারে মক্কা সেনাবাহিনী যখন অগ্রগমনে উদ্যত এমতাবস্থায় কুরাইশদের মনে পড়ে গেল বনু বাকর গোত্রের কথা। বনু বাকর গোত্রের সঙ্গে তখন তারা ছিল যুদ্ধরত। এ কারণে তাদের আশঙ্কা হল যে, হয়ত বনু বাকর পিছনে থেকে তাদের আক্রমণ করবে এবং ফলে দুই জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডের মধ্যে তাদের নিপতিত হতে হবে। এ ধারণা তাদেরকে যুদ্ধের সংকল্প থেকে বিরত রাখার মতো মানসিক পরিবেশ সৃষ্টি করল। কিন্তু এমন সময়ে অভিশপ্ত ইবলীস শয়তান বনু কিনানাহ গোত্রের নেতা সুরাক্বাহ ইবনু মালিক ইবনু জু’শুম মুদলিজীর রূপ ধরে প্রকাশিত হল এবং বলল, ‘আমিও তোমাদের বন্ধু এবং আমি তোমাদের নিকট এ বিষয়ের জামিন হচ্ছি যে, বনু কিনানাহ তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে না কিংবা কোন অশোভনীয় কাজও করবে না।
মক্কা সেনাবাহিনীর যুদ্ধযাত্রা
সুরাক্বাহ ইবনু মালিকরূপী অভিশপ্ত ইবলীস শয়তান বনু কিনানাহর ব্যাপারে জামিন হওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করায় কুরাইশগণ আশঙ্কামুক্ত হয়ে মক্কা থেকে বেরিয়ে পড়ল। আল্লাহ তা‘আলা যেমনটি বলেছেন।
‘‘তারা শক্তিমত্তায় গর্বিত হয়ে জনগণকে (নিজেদের শক্তিমত্তা) দেখাতে দেখাতে আল্লাহর পথে বিঘ্ন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নিজেদের গৃহ হতে বহির্গত হলো।’ (আল-আনফাল ৮ : ৪৭)
আর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যেমনটি বলেছেন, ‘নিজেদের ক্ষুরধার অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ)-এর নিকটে অপমানিত হয়ে প্রতিশোধ নেয়ার ও আত্ম-অহমিকার নেশায় উন্মত্ত হয়ে এ বলে যুদ্ধে বেরিয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাথীগণ মক্কাবাসীগণের ব্যবসায়ী দলের উপর চক্ষুত্তোলনের হিম্মত পেল কোথায় থেকে?’
মক্কা বাহিনী খুব দ্রুত গতিতে উত্তর মুখে বদর প্রান্তরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। অগ্রযাত্রার এক পর্যায়ে তারা উসফান ও কুদায়েদ উপত্যকা অতিক্রম করে যখন জুহফা নামক স্থানে উপস্থিত হল তখন আবূ সুফইয়ানের লোক এসে সংবাদ দিল যে, ‘কাফেলা নিরাপদে চলে এসেছে সুতরাং সামনে আর অগ্রসর না হয়ে এখন ফিরে যাওয়ার পালা।’